দ্বিতীয়বারের মতো সভাপতি হলেন মিশা সওদাগর
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগমুহূর্তে শিল্পীমহলের অনেকের কাছেই প্রত্যাশা ছিল সমিতিতে নারী সভাপতি হিসেবে মৌসুমীই জয়ী হবেন। কিন্তু ইতিহাস আর তৈরি হলো না। ১০২ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেলেন মৌসুমী। অন্যদিকে, ২২৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জয়ের মালা উঠল ঢাকাই চলচ্চিত্রের খলনায়ক মিশা সওদাগরের গলায়। ১২৫ ভোট পেয়েছিলেন মৌসুমী। এদিকে ২৮৪ ভোট পেয়ে জয়ী হলেন সমিতির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। গত শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে দ্বিবার্ষিক (২০১৯-২১) এ নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চন।
এবারের নির্বাচনে ২১টি পদের বিপরীতে ২৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এবার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভোটার সংখ্যা ৪৪৯ জন। ভোট দিয়েছেন ৩৮৬ জন। সভাপতি পদে মিশা সওদাগরের বিপরীতে ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মৌসুমী। সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের বিপরীতে ছিলেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াস কোবরা। যিনি ভোট পেয়েছেন ৬৮টি। সহসভাপতির দুটি পদে জয়লাভ করেন ডিপজল ও রুবেল। ডিপজল ৩১১ ভোট ও রুবেল ২৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নানা শাহ্। তিনি ৯৮টি ভোট পেয়েছেন। সহসাধারণ সম্পাদক পদে আরমান ২৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাংকোপাঞ্জ পেয়েছেন ৭১ ভোট। আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে মামনুন ইমন ২৪৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নূর মোহাম্মদ খালেদ আহমেদ, পেয়েছেন ১০৫ ভোট। সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জাকির হোসেন ২৩০ ভোটে নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ডন, পেয়েছেন ১২২ ভোট। এদিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন ছাড়াই বিজয়ী হয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সুব্রত, দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে জ্যাকি আলমগীর এবং কোষাধ্যক্ষ পদে ফরহাদ। কার্যনির্বাহী সদস্য পদে ১৪ জন প্রার্থীর মধ্যে জয়লাভ করেন অঞ্জনা সুলতানা, রোজিনা, অরুণা বিশ্বাস, আলীরাজ, বাপ্পারাজ, আফজাল শরীফ, মারুফ, আসিফ ইকবাল, আলেকজান্ডার বো, জেসমিন ও জয় চৌধুরী। প্রত্যেকেই মিশা-জায়েদ প্যানেলের হয়ে নির্বাচন করেছেন। এদিকে, গত শুক্রবার ভোটকে কেন্দ্র করে বিএফডিসিতে সারাদিন কড়া নিরাপত্তা দিয়েছে পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পীরজাদা শহিদুল হারুন ও বিএইচ নিশান। নির্বাচন বিষয়ে কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে কেউ আপিল করতে চাইলে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে যোগাযোগ করতে হবে। এর জন্য আপিল বোর্ডের কাছে ২০০০ টাকা জমা দিতে হবে। নির্বাচনী আপিল বোর্ডের আপত্তির শুনানি ও নিষ্পত্তির তারিখ ২৯ অক্টোবর। নির্বাচনী চূড়ান্ত ফল ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে বিদায়ী পরিষদ নবনির্বাচিত পরিষদকে দায়িত্ব অর্পণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলাফল ঘোষণার পর মৌসুমী বলেন, ‘নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। মিশা ও জায়েদকে অভিনন্দন, তাদের পাশে থাকব। শিল্পী সমিতি যে সিদ্ধান্তগুলো নেবে সেগুলোর সঙ্গে আমিও একমত থাকব। শিল্পী সমিতির স্বার্থরক্ষা হয়, এমন সব ধরনের কাজে সমর্থন করব।’ এদিকে নির্বাচিত মিশা সওদাগর বলেন, ‘এ জয় আমার নয়, এ জয় পুরো চলচ্চিত্র পরিবারের। তারা চেয়েছেন বলেই দ্বিতীয়বারের মতো আমাকে শিল্পী সমিতির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। এ জন্য সমিতির সব ভোটারদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’
No comments