আবারও বিপদের মুখে সাকিব আল হাসান

ত কয়েকদিন ক্রিকেটারদের ধর্মঘটে আলোচনায় ছিলেন সাকিব আল হাসান। বোর্ড ও ক্রিকেটারদের মধ্যে আপাতত ‘শান্তি চুক্তি’ হওয়ায় এ অলরাউন্ডার মাঠে ফেরার অপেক্ষায়। তবে এরই মধ্যে আবার তিনি খবরের শিরোনাম হয়েছেন ভিন্ন কারণে।

এবার সাকিব সমস্যায় পড়েছেন গ্রামীণফোনের সঙ্গে সাড়ে তিন কোটি টাকার চুক্তিতে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বলছে, বাণিজ্যিক এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি যে চুক্তি করেছেন সেটা ঠিক নিয়ম মেনে হয়নি। নিয়ম ভাঙায় সাকিবকে এবং গ্রামীণফোনকে আইনি নোটিস দিচ্ছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি।

গ্রামীণফোনের সঙ্গে সাকিবের সাম্প্রতিক এ চুক্তি নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ‘সে (সাকিব আল হাসান) এমন কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের (কোনো টেলিকম কোম্পানি) সঙ্গে বিজ্ঞাপন চুক্তি করতে পারে না। কেন পারে না? সে কথা বিসিবির সঙ্গে তার চুক্তিপত্রে পরিষ্কার লেখা আছে। টেলিকম সংস্থা রবি আমাদের টাইটেল স্পন্সর ছিল। তখন সেই টাইটেল স্পন্সরশিপের জন্য গ্রামীণফোন অংশও নেয়নি। অথচ সে সময়টায় গ্রামীণফোন আমাদের কয়েকজন ক্রিকেটারকে এক কোটি দুই কোটি টাকা দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্পন্সরশিপ চুক্তি করে। এর ফলে বিসিবি তিন বছরে প্রায় ৯০ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়! কিছু খেলোয়াড় লাভবান হয়, আর বোর্ড পড়ে আর্থিক ক্ষতিতে। এমনটা তো ঘটতে দেওয়া যায় না। খেলোয়াড়রা এখন কে কি চুক্তি করবে সেটা বোর্ডকে অবশ্যই কাগজপত্রের মাধ্যমে জানাতে হবে। শুধু তাই নয়, আমাদের চুক্তিপত্রে এটা বলা আছে যে, মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে কোনো টেলিকম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যেন ক্রিকেটাররা চুক্তি না করে। তাহলে এমন পরিস্থিতিতে আমাদের না জানিয়ে কেন কোনো ক্রিকেটার এমন বাণিজ্যিক চুক্তি করবে? আর তার (সাকিবের) এ চুক্তির সময়টা দেখেন? যখন কোন ক্রিকেট ছিল না (ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের কারণে) তখনই চুক্তিটা হয়েছে। এটা তো ঔদ্ধত্য! আমরা আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা কাউকে ছাড় দেব না। অবশ্যই ক্ষতিপূরণটা দাবি করব। শুধু খেলোয়াড় নয়, আমরা সেই প্রতিষ্ঠান থেকেও ক্ষতিপূরণ চাইব। আমি সাকিব ও গ্রামীণফোনের এ চুক্তি সম্পর্কে ২৩ অক্টোবর জানতে পেরেছি। তারপর গ্রামীণফোনে কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিস পাঠিয়েছি। সাকিবকে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যাখা দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। সে যে কোনো নিয়ম ভাঙেনি সেটা প্রমাণ করার জন্য সুযোগ তাকে দেওয়া হবে। আমাদের কাছে ব্যাপারটাকে মনে হয়েছে, বোর্ডের কোনো নিয়মকানুন মানি না টাইপের মতো! এমন কিছু হলে আমরা অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেব।’

গ্রামীণফোনের সঙ্গে সাকিবের নতুন এ চুক্তি সম্পর্কে বিসিবির কেউ কিছু জানে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন, ‘গ্রামীণফোনের সঙ্গে সাকিবের এ চুক্তি সম্পর্কে আমরা মোটেও অবগত নই। সাধারণত জাতীয় দলের স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তিতে যেতে আমরা খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করি না। এখন আমাদের জাতীয় দলের স্পন্সর ইউনিলিভার। কিছুদিনের মধ্যে তাদের সঙ্গে আমাদের চুক্তিটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। ঠিক এমন সময় যদি কোনো খেলোয়াড় কোন টেলিকম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করে তাহলে জাতীয় দলের সঙ্গে সামনের সময়ের জন্য স্পন্সর চুক্তিতে অন্যান্য টেলিকম প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে আগ্রহী হবে না।’
বিশ্বকাপের আগে তামিম গ্রামীণফোন ও মুশফিক রবির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের প্রস্তাব পেয়েছিলেন। কিন্তু বোর্ড থেকে তারা অনুমতি পাননি। তাই এখন সাকিবের ক্ষেত্রেও সে পথেই হেঁটেছে বিসিবি।
ক্রিকেটারদের ধর্মঘটে সাকিব ছিলেন নেতৃত্বে, যা মোটেও পছন্দ হয়নি বিসিবির। তাই এবার সংস্থাটি তাকে চাপে রাখতেই দিচ্ছে আইনি নোটিস। তার মানে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিসিবির যে মনোমালিন্য হয়েছিল, তা এখনও পুরোপুরি কাটেনি?
E-money exchange rates listing

No comments

Powered by Blogger.